Be তার্কিক
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
“বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর” এই প্রবাদ বাক্য মনে করিয়ে তর্ক থেকে শত হস্ত দূরে থাকতে ছোটোবেলায় উপদেশ দিতেন গুরুজনেরা। শান্তিপ্রিয় মানুষ তর্ক এড়িয়ে চলে, যুক্তিবাদী মন অহেতুক তর্ক এড়িয়ে চলে- এ তো খুবই গতানুগতিক কথা, সবাই জানে। তবুও কখনো কখনো কমবেশী কথা বলতেই হয় যুক্তির নিরিখে- তাকে তর্ক না বলে আলোচনা বলাই শ্রেয়।
কিন্তু সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে তর্ক বড়ো স্বস্তির শ্বাস নিচ্ছে। প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে তার্কিক আলোচনা বকলমে মাত্রাহীন সমালোচনার বহরে শিক্ষিতের পরিমাপ ও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠার অপপ্রচেষ্টা বেশ দুরন্ত গতিতে এগোচ্ছে বর্তমানে। শিক্ষা কথাটা বললাম না- কারণ এখন শিক্ষার থেকে শিক্ষিতের কদর বেশি। এই দু’টো শব্দ যে সমার্থক কখনোই নয়, এ বোধহয় কমবেশী আমরা সকলেই মানি। তবে স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবী ও বিচক্ষণ ব্যক্তিত্বের কথা আলাদা, এঁরা তর্কে একেবারে তক্ষশীলা.. এঁরা ঘরের কথা উঠোনে বলতে ভালোবাসেন- মন্তব্যের জোয়ার ভাটায় গা ভাসিয়ে জনপ্রিয় হবার সুযোগের সুতোয় মাঞ্জা দিতেই থাকেন। অনেক সময় নিজের মাঞ্জায় নিজের হাত কাটে, কখনো সুতো জড়িয়ে হাটে-বাজারে উলঙ্গ হচ্ছেন। যদিও সেই বোধে শান দেবার পাথর তাঁদের কাছে মনে হয় নেই। অতঃকিম!
আর সংবাদ মাধ্যম? সে যেন এক বিভীষিকা- কি বলছেন, কেন বলছেন কোনো তোয়াক্কা নেই, যেভাবেই হোক জনপ্রিয়তা চাই- সে মায়ের চোখের জল বেচেই হোক বা নেতার ধুতিতে টান দিয়েই হোক.. জল ঘোলা করতেই হবে। এগোতে হবে, “সীমা না” ট্যাগ লাইনে, সুতরাং বিতর্কের বিতরণ চলবেই। ভাবখানা আমি হযবরল বলছি, তুমিও বলো, বাইরে বেরিয়ে বুড়ো আঙুল ঠেকিয়ে ভাব করে নেবো। পাবলিক খাচ্ছে তো ক্ষতি কি? ঘোলা জলে সাঁতরাও। আসল বিষয় থেকে মন ঘুরিয়ে দিন তো এগোচ্ছে ভালোই..তাই Be তার্কিক।
হয়তো খানিক অহেতুক কথার চাষ- কিন্তু যা চোখে পড়ে, তাই খানিকটা মনে ধরে, বাকিটা কলমের ঘাড়ে।
আগামী শুভ হোক, এই আশাটুকু থাক সবার প্রাণে।
শুভেচ্ছা ও শুভকামনায় আলাপী মন।